ব্যান্ড সঙ্গীত
৮০ এর দশককে বিবেচনা করা হয় ব্যান্ড সঙ্গীতের উত্থানের এক উত্তাল সময়, আর ঠিক সেই সময়ে আমাদের বেড়ে উঠা। তখন ঢাকার অধিকাংশ তরুনদের মুখে মুখে ফিরত নানা রকম জনপ্রিয় ব্যান্ড এর গান। ব্যান্ড এর গান তরুনদের নানাভাবে মাতিয়ে রাখত যেখানে গানের বিষয়বস্তু হিসেবে প্রেম, বিরহ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র ও সমাজের নানাবিধ অসামঞ্জস্য ছিল অন্যতম। অথচ বাংলাদেশের ব্যান্ড কিংবা রক সঙ্গীত নিয়ে খুব বেশি লেখালেখি বা গবেষণা হয়নি। তারপরও যে গুটিকতক লেখার কথা আমরা এখানে উল্লেখ করতে পারি সেগুলো হচ্ছে লতিফুল ইসলাম শিবলী রচিত ‘বাংলাদেশে ব্যান্ড সংগীত আন্দোলন’, মিলু আমান রচিত ‘রক যাত্রা’ এবং সাম্প্রতিক সময়ে মাকসুদুল হক রচিত ‘বাংলাদেশের রকগাথা: আজম খানের উত্তরাধিকার’। এই সবগুলো বইয়ের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একজন সঙ্গীতজ্ঞ এর চোখে বাংলাদেশের রক সংগীত ও তার ইতিহাসকে দেখা। এখানে ‘বাংলাদেশের রকগাথা’ বইটি মাকসুদুল হক রচিত, আজম খান কে কেন্দ্র করে একটি স্মৃতিচারণমূলক লেখা। এই বইয়ের মাধ্যমে মাকসুদুল হক, যিনি ভক্তকূলের নিকট মাকসুদ নামেই অধিক পরিচিত, নিজের আবেগকে যেভাবে প্রকাশ করেছেন সেটি বাংলাদেশের রক সংগীতের গুরু হিসেবে খ্যাত আজম খানের প্রতি বাংলাদেশের কোন সঙ্গীত শিল্পীর অন্যতম নিবেদন হিসেবে দেখতে পাই। এই আজম খান এর হাত ধরেই বলা যায় মুক্তিযুদ্ধত্তোর সময়ে বাংলার মানুষ এক নতুন ধরনের সঙ্গীতের স্বাদ আস্বাদন করতে শুরু করে। যদিও তার পূর্বের প্রজন্ম এই নতুন ধারার সঙ্গীতকে ভালভাবে মেনে নিতে পারেনি। সেই ঐতিহ্য আমাদের বেড়ে ওঠার সময়েও লক্ষ করি। হয়তো এ কারণেই ব্যান্ড সঙ্গীত এখনোও মূলধারার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠতে পারেনি।
4 comments